জগন্নাথপুরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে, কৃষক-কৃষানীর মূখে হাসি ফুটেছে

জগন্নাথপুরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে, কৃষক-কৃষানীর মূখে হাসি ফুটেছে
মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
জগন্নাথপুরের হাওর গুলোতে বোরো ধান কাটা শুরু হওয়েছে। কৃষক- কৃষাণির মুখে আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছে।জনমনে আনন্দ -উল্লাস বিরাজ করছে। হাওরে হাওরে পাকা ও আধা পাকা ধান মৃদূ বাতাসের আলিঙ্গনে দুলছে। মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আর ধানের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ বুধবার (৪ঠা এপ্রিল) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ জেলাধীন  জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর সহ অন্যান্য ছোট বড় হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান কাটা শ্রমিকদের সাথে জমির মালিকরাও আনন্দ-উল্লাসে ধান কাটছেন। এ সময় উপজেলার নলুয়ার হাওর পাড়ের চিলাউড়া গ্রাম নিবাসী কৃষক শমশের আলী বলেন, মাঠ ভরা সোনার ফসল ধানের মৌ মৌ সু-গন্ধে পেটের ক্ষুধা দুরে-বহুদুরে   এবার বোরো ফসল কাটতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। ধানের ফলন খুবই ভাল হয়েছে। এবার আমি ৬ কেদার ২৮ ও ৬ কেদার ২৯ ধান চাষাবাদ করেছি। কলকলিয়া ইউনিয়নের বালিকান্দী(মোকামপাড়া) নিবাসী চন্দন মিয়া বলেন,হাওরে  ভাল ফসল হয়েছে। উচু জমিতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ৪/৫ দিনের মধ্যে সবকটি হাওরে পুরুধমে ধান কাটা যাবে।  প্রকৃতি অনুকুলে থাকলে গোলাভরে ধান তুলতে পারব। অন্যান্য কৃষকরাও এভাবে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
এ ছাড়াও জমির পাকা ধান গোলায় তুলতে কৃষকরা শ্রমিক সংগ্রহ, ধান মাড়াইয়ের মেশিন সংগ্রহ, ধান শুকানোর খলা ও ধান রাখার গোলা তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রকৃতি অনুকুলে থাকলে আর মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা জমির ধান গোলায় তুলতে পারবেন বলে  আাশাবাদী।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, এবার জগন্নাথপুরে ২২ হাজার ৩৩৩ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ  হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে ব্রি ২৮ ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রকৃতি অনুকুলে থাকলে এবার বাম্পার ফলন গোলায় উঠবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লাল সার কম দেয়া, তাপমাত্রার ভারসাম্যহীনতা সহ বিভিন্ন কারণে ২৮ ধানে সামান্য ছিটা হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। অন্য ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী জগন্নাথপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত (এসও) নাসির উদ্দিন বলেন, ধান কাটা শুরু হওয়াতে কৃষকদের সাথে আমরাও আনন্দিত। যদিও এবার হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ খুবই ভাল হয়েছে। এরপরও প্রকৃতির সাথে কারো হাত নেই। যদি প্রকৃতি অনুকুলে থাকে তবে এবার বাম্পার ফসল পাবেন কৃষকরা।
উপজেলার নলুয়ার হাওর পাড়ের কলকলিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ তারা মিয়া বলেন, বিগত বছর অকাল বন্যায় হাওর ডুবিতে ফসল হানির ঘটনায় কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এবার বাম্পার ফসল গোলায় উঠলে কিছুটা হলেও পুরণ হবে। এছাড়া ধান কাটা শুরু হওয়াতে কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস  বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য , বিগত বছর অকাল বন্যায় হাওর ডুবিতে কাঁচা-পাকা ফসল হানির ঘটনায় কৃষকদের আহাজারিতে চারদিকে হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে সারা বছর কৃষকদের চাল ও টাকা দিয়ে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখে। যার ফলে ভাতের অভাবে কোন মানুষকে কষ্ট পেতে হয়নি। এবার জমির পাকা ধান কাটতে পেরে কৃষক-কৃষাণির মুখে আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছে। কৃষকদের সাথে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment